খালি পেটে কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার নিয়ম? এর পুষ্টিগুণও উপকারিতা
খালি পেটে কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার নিয়ম এবং এর পুষ্টিগত গুণগত মান উপকারিতা সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষেরাই তেমন কিছু জানেনা। ছোলা আমরা ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খাইতে পারি
এবং ছোলার ডাল হিসেবে রান্না করে খেতে পারি। ছোলাতে অনেক পুষ্টি রয়েছে। কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে রেখে খাইলে দেহে দৈহিক বৃদ্ধি পায়। তাহলে চলুন খালি পেটে কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার নিয়ম পুষ্টিরগুন উপকারিতা সম্পর্কে জানব।
পেইজ সূচিপত্রঃ কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার পুষ্টিগুন ও উপকারিতা
- খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা কী কী
- কিসমিস খাওয়ার উপকারীতা কী কী
- ছোলা খাওয়ার আরো কার্যকারিতা দিক রয়েছে
- ছোলার অপকারী দিকগুলো কী কী দেখুন
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ছোলা খেলে কি হয়
- কাঁচা ছোলা ও রান্না করা ছোলার মত পার্থক্য
- প্রতিদিন কতটুকু কাঁচা ছোলা খাওয়া উচিত
- ব্যায়াম করার পর কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারীতা
- কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা কি
- উপসংহারঃ প্রতিদিন কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা কী কী
খালি পেটে ছোলা খাওয়ার উপকারিতা কি কি সে বিষয় সম্পর্কে আমরা জানব। কাঁচা ছোলা খাইলে শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে থাকে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য খাবারের সঙ্গে কাঁচা ছোলা বা বুট বেশ উপকারী। কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে মুখের রুচি শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাহলে দেরি না করে চলুন খালি পেটে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা কি কি জানব।
- ছোলা খেলে হৃদয় রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে
- ডাল হিসেবে ছোলার খাওয়ার ভূমিকা রয়েছে
- ছোলা খাওয়ার জন্য যৌন শক্তি বাড়ানোর জন্য সাহায্য করে
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ছোলার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে
- শরীরের রক্ত চলাচল করার জন্য ছোলার গুরুত্ব অপরিসীম
- ক্যান্সারের রোদ প্রতিরোধের জন্য ছোলার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ
- ডায়াবেটিস রোগীদের ছোলা খাওয়া উপকারী
- অস্থিরতা ভাব দূর করার জন্য ছোলা খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ
- স্বাস্থ্যরক্ষা বা জ্বালাপোড়া দূর করার জন্য ছোলা খান
- ব্যথা দূর করার জন্য ছোলার ব্যাপক অবদান রয়েছে
হৃদয়ে রোগের ঝুঁকি কমানোঃ হৃদয় রোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য কাঁচা ছোলা খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে হৃদয় রোগের ঝুঁকি কমে যায়। কাঁচা ছোলার উপর গবেষণা করে এক অস্ট্রেলিয়ান গবেষকরা দেখিয়েছেন যে খাবারের সাথে কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে টোটাল কোলেস্টেরল ও খারাপ করেস্টরেল এর পরিমাণ কমে যাওয়ার আশংকা থাকে।
ডাল হিসেবে ছোলাঃ ডাল হিসেবে ছোলা আমরা রান্না করে খেয়ে থাকি। ডাল আমাদের দেহের জন্য দৈহিক স্বাস্থ্য রক্ষা করে থাকে।ছোলাতে অনেক পরিমাণে ফলেট থাকে এবং খাদ্য আঁশ থাকে। কাঁচা ছোলাতে রয়েছে ফসফরাস, আইরন, আমিষ, ট্রিপট্যোফান ইত্যাদি। এজন্যই ডাল হিসেবে ছোলা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
যৌনশক্তি বাড়াতে ছোলাঃ যৌন শক্তি বাড়ানোর জন্য কাঁচা ছোলা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা কাঁচা ছোলাতে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি রয়েছে। কাচা ছোলা জনশক্তি বাড়ানোর জন্য ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ছোলাঃ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাঁচা ছোলা খাওয়ার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে গবেষণার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে যেসব কম বয়সী মেয়েরা অনেক পরিমাণে ফলিক এসিডযুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন। তাদের জন্য হাইপারটেশনের প্রবণতা কমে যায়। এজন্যই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য কাঁচা ছোলা খাওয়াই ভালো।
রক্ত চলাচলঃ রক্ত চলাচল করার জন্য কাঁচা ছোলা খাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ। এক গবেষক গবেষণা করে দেখেছেন যে প্রতিদিন ১/২ কাপ ছোলা, মটর এবং শিম খেয়ে থাকেন তাদের পায়ের তলাতে আর্টারিতে রক্ত চলাচল বাড়তে থাকে। এজন্যই রক্ত চলাচল করার জন্য কাঁচা ছোলা, মটর ও শিম খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম।
ক্যান্সার রোধে ছোলাঃ ক্যান্সার রোধ করার জন্য ছোলা খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কোরিয়ান গবেষকরা গবেষণা করে প্রমাণ করেছেন যে অনেক পরিমাণে ফলিক এসিড খাবার তালিকা সাথে যুক্ত থাকে। এতে করে নারীদের করণ ক্যান্সার ও রেক্টাল ক্যান্সার এর ঝুঁকি এড়ানোর জন্য নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে পারে।
ডাইবেটিকসঃ ডাইবেটিকস এ হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কাঁচা ছোলা খাওয়া প্রযোজ্য। কেননা কাঁচা ১০০ গ্রাম ছোলাতে রয়েছে ১৭ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন।৬৪ গ্রাম শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেট ও ৫ গ্রাম তেল। এজন্যই ডায়াবেটিস রোগীদের ছোলা খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ছোলা খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
স্বাস্থ্যরক্ষা বা জ্বালাপোড়াঃ স্বাস্থ্য রক্ষা বা জ্বালাপোড়া দূর করার জন্য ছোলা খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। ছোলাতে রয়েছে খাদ্য উপাদান নামক সালফার। এতে করে মাথা মস্তিষ্ক হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। এবং একই সাথে স্বাস্থ্য রক্ষা এবং হাত-পায়ের তলার জ্বালাপোড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ব্যথা দূরঃ ব্যথা দূর করার জন্য ছোলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'বি'। ছোলাতে ভিটামিন 'বি' থাকার ফলে শরীরের মেরুদন্ডের ব্যথা, স্নায়ু দুর্বলতা কমানোর জন্য সাহায্য করে। ছোলা একটি পুষ্টিকর খাবার। ছোলার উল্লেখযোগ্য উৎস হলো আমিষ। মাছ মাংসের পরিমাণের সমান প্রায় আমিষ। তাই প্রতিদিন খাবার তালিকা সাথে কাঁচা ছোলা খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
হজমি শক্তি উন্নতিঃ হজমির শক্তি উন্নতি করার জন্য ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজমি সত্যি করার জন্য সহায়তা করে। কাঁচা ছোলা ভিজেয়ে রেখে খাবার ফলে শরীরের ক্ষতিকারক দিকগুলো বের করে দেই। এবং শরীর সুস্থ থাকে। এবং নিয়মিত কাঁচা ছোলা খাবারের ফলে কষ্ট কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের মত হজমি সমস্যা দূর করার সহায়তা করে।
ওজন কমাতেঃ ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে রেখে সেবন করেন। এতে করে আপনার শরীর বৃদ্ধি কমে যা সহায়তা করে। এবং একই সাথে শরীরের অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়া থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করে।
চুলপড়া সহায়তাঃ চুল পড়া সহায়তা করার জন্য কাঁচা ছোলা খ জরুরি। কাঁচা ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজের উৎস থাকে। তাই নিয়মিত কাচা ছোলা খাওয়ার ফলে চুল পড়া থেকে করে।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশি অ্যাপ দিয়ে ঘরে বসে ১৫/২০হাজার টাকা আয়
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা কী কী
কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা কী কী তা প্রায় অধিকাংশ লোকেরাই কিসমিস খাওয়ার উপকারী জানে৷ কিসমিস খাওয়ার ফলে শরীরের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল দূর করে থাকে। কিসমিস নানা ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। কিসমিস এবং কিসমিস ভেজানো পানি খেলেও প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে। তাই কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানবো।
কিসমিস প্রচুর পরিমাণে আয়রণ, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আপনার দেহের শক্তি বৃদ্ধির সহায়তা করে। এবং আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং চুল পড়া থেকে সাহায্য করে। এজন্যই নিয়মিত কিসমিস বা কিসমিস ভেজানো পানি পান করুন। কিসমিস খেলে কি হয় নিম্নে জানবো
- ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা কমানোর সহায়তা করে
- হজম শক্তি বাড়ানোর সহায়তা করে থাকে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- বিষমুক্ত বা দূষণমুক্ত শরীর রাখার সাহায্য করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর সহায়তা করে থাকে।
ব্লাড প্রেসারঃ ব্লাড প্রেসার রোগীদের জন্য কিসমিস খাওয়া জরুলী।কেননা কিসমিস প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম হাইব্লাড পেশার বশ করে রাখার সহায়তা করে। কিসমিস খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
রক্তশূন্যতাঃ রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য কিসমিস খাওয়া যথেষ্ট উপকারী। নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার ফলে এর মধ্যে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিয়ান এর মাত্রা বাড়ায় থাকে। এছাড়াও কিসমিসের মধ্যে রয়েছে তামা যা রক্ত লাল রক্ত কণিকা তৈরি করার জন্য সাহায্য করে। তাই রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য নিয়মিত কিসমিস সেবন করেন।
হজম শক্তিঃ হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য কিসমিস খাওয়া গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস পানিতে পরিমাণ মতো কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন ভোরবেলা উঠে কিসমিস টি সেবন করুন। নিয়মিত কিসমিস সেবন করার ফলে আপনি আপনার শরীরের আজমের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত ১ মাস সেবন করুন।
রোগ প্রতিরোধঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত কিসমিস খান। এবং কিসমিসের সাথে আপনি চাইলে কিসমিস ভেজানো পানি খাইতে পারেন রয়েছে আন্টিঅক্সিডেন্ট।কিসমিস বা কিসমিস ভেজানো পানি সেবন করার ফলে রোগের সঙ্গে লড়াই করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সাহায্য করে।
বিষমুক্ত শরীর রাখতেঃ বিষমুক্ত শরীর রাখার জন্য নিয়মিত কিসমিস সেবন করুন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কিসমিস বা কিসমিস ভেজানো পানি করার ফলে শরীরের দূষণমুক্ত হয়ে থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোঃ কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর জন্য নিয়মিত কিসমিস খান। আপনি যদি পেটের সমস্যায় ভুগছেন তাহলে নিয়মিত সকালে খালি পেটে কিসমিস বা ইসমাইল ভেজানো পানি পান করুন। এতে করে আপনার শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে। কিসমিস ও কিসমিস ভেজানো পানি ওষুধের চেয়ে কার্যকরী।
ছোলা খাওয়ার আরো কার্যকারিতা দিক রয়েছে
ছোলা খাওয়ার আরো কার্যকারিতা দিক রয়েছে যাদের শরীর বৃদ্ধি বা ওজন অনেক বৃদ্ধি তাদেরকে ছোলা, সবজি, টক দই খাওয়ার জন্য ডাক্তারেরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ছোলাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন 'বি' আছে। ওর সাথে ছোলার আঁশ শরীরের ওজন কমানোর জন্য সহায়তা করে থাকে।
প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য আমাদের নিত্যদিনে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম এবং ডাল সব ধরনের খাবার খেতে হয়। এর মত হল ফার্স্ট ক্লাস বাণিজ্য প্রোটিন। এবং সেকেন্ড ক্লাস হিসেবে ডাল ও বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। অধিকাংশ লোকের শরীরে কোলেস্টেরল বেশি মাত্রায় থাকে তাদেরকে চলো খাওয়ার প্রযোজ্য।
সাধারণত ভাবে ছোলাকে আমরা দু ভাগে বিভক্ত করি। প্রথমটি হচ্ছে আস্ত ছোলা সেটা হচ্ছে সিদ্ধ করা ছোলা বা ভেজে খাওয়া চলা। অপরটি হচ্ছে ছোলার ছাতু। আমাদের গ্রামাঞ্চলে প্রায় ছোলাকে গোড়া করার মাধ্যমে ছাতু করে থাকে। যাদের শরীরের ওজন অনেক বৃদ্ধি তাদের জন্য এবং বাচ্চাদের খাবারের সাথে এই সোলার ছাতুটি ব্যবহার করে থাকেন।
ছোলার প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ ও প্রোটিন থাকে। ৬৪ গ্রাম শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট, ৫ গ্রাম ফ্যাট বা তেল রয়েছে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা অনেক ভালো। ছোলার ফ্যাট বা তেলের বেশিরভাগইতে রয়েছে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট।যা শরীরের জন্য কোন প্রতিকারক দিক নয়।
ছোলাতে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে যেমন খনিজ লবণ। প্রতি 100 গ্রাম ছোলাতে ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম থাকে। ছোলাতে রয়েছে খাদ্য -আঁশ। এতে করে শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার সহায়তা করে থাকেন। তাই নিয়মিত ছোলা সেবন করবেন।
আরও পড়ুনঃ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
ছোলার অপকারি দিকগুলো কী কী দেখুন
কাঁচা ছোলার উপকারী দিকগুলো কি কি তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করব। যেকোনো দিকের ভালো-মন্দ উভয় দিক রয়েছে। তেমনি কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারী দিক আছে এবং অপকারী দিক এসে। তাহলে চলুন দেরি না করে কি কি অপকারী দিক আছে সে বিষয় সম্পর্কে জানব।
কাঁচা ছোলা ভেজে খেতে আমাদের অনেকেরই পছন্দ। কিন্তু কাঁচা ছোলা ভিজে খেতে কিছু অপকারি অধিক রয়েছে। কাঁচা ছোলা ভেজে খেলে ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাদের ওজন বৃদ্ধি তাদের কাঁচা ছোলা ভিজে না খাওয়াই ভালো। কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খাবেন। এতে করে শরীরের স্বাস্থ্য ঝুকির হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
যাদের বমির সমস্যা আছে তাদের জন্য কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে শরীরের স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। মশলা বা তেল দিয়ে ভাজা ছোলা খেতে অনেকেরই পছন্দ হয়ে থাকে কিন্তু এতে শরীরের ঝুঁকিপূর্ণ বৃদ্ধি পায়। এতে করে আজমি শক্তি সহায়তা করে না। অতিরিক্ত তেল বা মসলা শরীর স্বাস্থ্যের ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে এটি খুবই ক্ষতিকারক।
আপনাদের কারো যদি হজম শক্তি কম হয়ে থাকে তাহলে কাঁচা ছোলা খাবেন না। কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে হজম শক্তি কমে যায়।অতিরিক্ত মাত্রায় কাঁচা ছোলা সেবন করা ঠিক নয়। কিন্তু যাদের কিডনির সমস্যা আছে তাদের রক্তের ডায়ালিসিস চলছে। কিন্তু যাদের শরিলে কেটে নিন ও ইউরিক এসিড এর পরিমান বেশি মাত্রায় থাকে তাদের জন্য যোগ্য নহে।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ছোলা খেলে কি হয়
প্রতিদিন সকালে নিয়মিত করে খালি পেটে ছোলা খাওয়ার ফলে শরীরের স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ কম থাকে। এছাড়াও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ভেজানো ছলাতে আছে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন। ভেজানো ছোলা খেলে আমাদের শরীরের হজমে প্রক্রিয়া ধীরে করে দেয়ে থাকে।
ভেজানো ছোলা খাওয়ার পরে শরীরের শর্করা শোষণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাই প্রতিদিন নিয়মিত করে ভেজানো ছোলা খান। এবং ভেজানো ছোলা খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিকস ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। এবং যাদের ওজন বৃদ্ধি কাঁচা ভেজানো ছোলা খাবার ফলে ওজন কমায়। ভেজানো ছোলাতে রয়েছে পুষ্টি গুণে ভরপুর। তাই নিয়মিত করে ভেজানো ছোলা খান।
ছোলা প্রতিদিন নিয়মিত খাওয়ার ফলে পায়ের আর্টরিতে রক্ত চলাচল করার সহায়তা বৃদ্ধি করে। ছোলা খাওয়ার ফলে ছোলায় যে পরিমাণ ক্যালোরি দীর্ঘক্ষণ শরীর শক্তির যোগায় দেওয়ার সাহায্য করে। তাই ছোলা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে খাবেন। অতিরিক্ত মাত্রায় ছোলা খাইলে স্বাস্থ্যঝুকির সম্ভাবনা থাকে।
কাঁচা ছোলা ও রান্না করা ছোলার মধ্যে পার্থক্য
কাঁচা ছোলাও রান্না করার ছোলার মধ্য পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।কেউ কেউ কাঁচা ছোলা খেয়ে থাকেন এবং অনেকেই মশলাই ভাজা ছোলা খেয়ে থাকে। যে যেভাবেই হোক না কেন ছোলা খাওয়ার শরীরের জন্য ভালো। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ বলেছেন।
মশলাই ভাজার ছোলাঃ মসলায় ভাজার ছোলা অনেকেরই পছন্দ। মশলাই ভাজার ছলাতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ আছে। মসলা দিয়ে ছোলা পেলে ভাজলে অনেক পরিমাণে ক্যালরির বেড়ে যায়। যাদের ক্যালর বাড়াতে চায় তাদের জন্য মসলাই ভাজা ছোলা শরীরের জন্য উপকারী। এবং যাদের ক্যালরি বাড়াতে চান না তাদের জন্য মাশলাই ভাজা ছোলা খাওয়া উচিত নয়।
মসলাই ভাজার ছোলা খেয়ে যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চাই তাদের জন্য মসলাই ভাজা ছোলা খাওয়াই ভালো। কিন্তু যারা ওজন বাড়াতে চান না তাদের জন্য না খাওয়াই ভালো। কিন্তু মশলাই ভাজা ছোলা অতিরিক্ত পরিমাণে মসলা দিয়ে ভাজবেন না।এতে করে স্বাস্থ্যঝুকির সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
কাঁচা ছোলাঃ কাঁচা ছোলা খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কাঁচা ছোলায় আঁশের পরিমাণ বেশি থাকে।সাধারণত কাঁচা ছোলা ক্যালোরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। তবে মশলাই ভাজা ছোলা মধ্য এগুলা থাকেনা। কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে শরীরের সত্যি পূরণের ঘারতির অভাব দূর হয়।
কাঁচা ছোলা বা মশলাই ভাজার ছোলা কোনটাই অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া যাবেনা। দুটোই পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত। পরিমাণ মতো না খাইলে শরীরের স্বাস্থ্যঝকে সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই সবগুলো পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত। এতে করে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
আরও পড়ুনঃ হ্যাক হওয়া থেকে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বাঁচান
প্রতিদিন কতটুকু কাঁচা ছোলা খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কতটুকু কাঁচা ছোলা হওয়া উচিত এ বিষয় নিয়ে আজকে আলোচনা করব। প্রতিদিন কাঁচা ছোলার সাথে টক দই মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। কখনোই অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া যাবে না। একজন সুস্থ মানুষের জন্য প্রতিদিন ২৫-৩০ গ্রামের বেশি ছোলা খাওয়া হবে না। এবং যারা সুস্থ আছে তারা অবশ্যই পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের ক্রমশ অনুযায়ী খাবেন।
কাঁচা ছোলাতে অনেক পরিমাণে ফলিক এসিড থাকে এবং রক্ত নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে পায়ের তলার আর্টরিতে রক্ত চলাচল বেড়ে যাওয়ার জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এবং যারা স্টোকের রোগী সেই ব্যক্তিদের আর্টরির কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়ার সাহায্য করে।
ছোলার মধ্য টিজাত ও শুকনো উভয় জাতের ছোলা খাওয়া শরীরের জন্য পুষ্টিকর। সব কিছুর একটি ভালো ও মন্দ দিক রয়েছে তেমনি কাঁচা ছোলা ও মসলায় ভাজা ছোলা এর ভালো মন্দ দিক রয়েছে। উভয় ছোলা কোনটাই বেশি মাত্রায় খাওয়া শরীরের জন্য ভালো না। তাই প্রতিদিন নিয়ন মাফিক খাবার খাবেন।
ব্যায়াম করার পর কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা
ব্যায়াম করার পর কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা অপরিসীম।আমাদের শরীরের জন্য ব্যায়াম করা খুবই প্রয়োজনী এতে করে শরীর স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর পাশাপাশি শরীরের সুন্দর গঠন দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ব্যায়াম করে আসার পর কাঁচা ছোলা খাওয়ার গুরুত্ব অপরিস।
ব্যায়াম করে আসার পর কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে পেশিস বহুল দেহে গঠনের ভূমিকা অপরিসীম। এতে করে শরীরের গঠন শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই ব্যায়াম করে আসার পর কাঁচা ছোলা খাবেন। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর কোথায় করে কাঁচা ছোলা। অধিকাংশ লোকেরাই ব্যায়াম করে আসার পর কাঁচা ছোলা খেয়ে থাকেন।
কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে রেখে খাওয়ার পর শরীরের শর্করার শোষণ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে রেখে খাওয়া ভালো। এতে করে শরীরের স্বাস্থ্যঝুকিপূর্ণ হাত থেকে রক্ষা করে। অল্প সময়ের মধ্য ছোলা খাওয়ার উপকারিতা বোঝা যায়।
কাঁচা ছোলা রাতে ঘুমানোর আগে একটি পাত্রে এক মুঠ ২৫/৩০ গ্রাম পরিমাণ মতো ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খাবেন। এবং সারাদিনের এনার্জি পাবেন। শরীর স্বাস্থ্য সতেজ থাকবে। এজন্যই কাঁচা ছোলা খাওয়া গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আপনিও কাঁচা ছোলা সকালে খালি পেটে খাবেন।
কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার পুষ্টিগুন ও উপকারিতা কী
কাঁচা ছোলা খাওয়ার পুষ্টিগুণ অপকারিতা কি কি এ সম্পর্কে আলোচনা করব। কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে দেহের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায়। তাই কাঁচা ছোলা খাওয়ার গুরুত্ব অবদান অনেক। তাহলে চলুন দেরি না করে কাঁচা ছোলা খাওয়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে জানব।
ছোলার পুষ্টিগুণ কী কী দেখুনঃ
- কাঁচা ছোলা একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
- কাঁচা ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এবং আন্টি অক্সিডেন্ট, যা দেহের হজম করার ক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটায়।
- কাঁচা ছোলা নিয়মিত খাওয়ার ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করার সহায়তা করে থাকে।
- কাঁচা ছোলা গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে। যার শরীরের জন্য রক্তের শর্করার মাত্রা ধীর গতিতে দাঁড়িয়ে থাকে।
- যাদের হাই কোলেস্টেরল রয়েছে, তাদেরকে মাছ মাংস কম করে খেতে বলা হয়ে থাকে।
কিসমিসের পুষ্টিগুনঃ
- সুস্থভাবে ওজন বাড়ানোর সাহায্য করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য সহায়তা করে।
- ক্যান্সারের রোগ প্রতিরোধ করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার সহায়তা করে থাকে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- হাড়ের স্বাস্থ্য বর্ধন করতে থাকে।
- ঘুম নিয়ম মাত্রায় হয়ে থাকে।
- আদম শক্তি বাড়ায়।
- রক্তশূন্যতা কমায়।
উপসংহারঃ প্রতিদিন কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার অপর নিয়ম, এবং কাঁচা ছোলা ও কিসমিসের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এবং কাঁচা ছোলা খাওয়ার অপকারীতা সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়েছি। এবং কাঁচা ছোলা নাকি রান্না করা ছোলা উভয় সম্পর্কে পার্থক্য বর্ণনা করেছি। আর ব্যায়াম করার পরে কাঁচা ছোলা খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন কোষ গঠনের সাহায্য করে থাকে।
প্রিয় বন্ধুরা,আমি আশা করছি আপনাদের কাছে আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার পুষ্টিগুণ উপকারিতা। আমাদের এই পোস্ট টি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধব এদের সাথে শেয়ার করবেন। এবং আরো নতুন নতুন পোস্ট লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করবেন। ধন্যবাদ........!!!
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url