সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারীতা ও অপকারীতা সম্পর্কে অনেকই জানেন আাবার অনেকেই জানেন না। তুলসী পাতা রস করে খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের নানান রোগ নিরাময় পাওয়া যায়। সেটাও ত্বকের কিংবা শরীরের দুটোতেই তুলসী পাতার উপকারিতা রয়েছে।
বিশেষ করে সর্দি এবং কাশির জন্য তুলসী পাতার রস অনেক উপকারী রয়েছে। এছাড়াও শরীরের নানা বৃদ্ধির ও প্রতিরোধ করার ভূমিকা পালন করে থাকে। তাহলে দেরি না করে চলুন তুলসী পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো
পেইজ সূচিপত্রঃ সকালে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- তুলসি পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
- তুলসী পাতা খাওয়ার অপকারিতা
- তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
- শিশুদেরকে তুলসী পাতা খাওয়ানোর নিয়ম
- শেষ কথাঃ তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
তুলসী পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। আমরা অনেকেই জানি যে তুলসী পাতার রস খাওয়ার শরীরের নানান রোগ নিরাময় হয়। এছাড়াও শরীরের ছোট কিংবা বড় সব ধরনের রোগ মুক্তি লাভের সহায়তা করে। তুলসী পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে দু লাইনে বলে বুঝানো সম্ভব না। তুলসী পাতার রস আয়ুর্বেদিক ঔষধ তুলনা করা হয়ে থাকে। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি অপকারিতা রয়েছে। সঠিক নিয়ম মেনে তুলসী পাতার রস খাওয়া উচিত।
তুলসী পাতার রস খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা নিম্নলিখিত বর্ণনা করা হলো।যথা:
- ত্বকের সৌন্দর্য রাখে
- ক্যান্সারের রোগ প্রতিরোধ করে
- মুখে দুর্গন্ধতা কমিয়ে রাখে
- কিডনি স্টোন রাখে
- গ্যাস্ট্রিক কমিয়ে রাখে
- হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে রাখে
- ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ রাখা সহায়তা করে
- জ্বর ও ঠান্ডা লাগা থেকে সাহায্য করে
- ফুসফুসের কর্ম ক্ষমতা বাড়ায় রাখা সহায়তা করে
- দৃষ্টিশক্তির উন্নতি করার সহায়তা করে
- মাথা যন্ত্রণার থেকে মুক্তি লাভ
- স্ট্রেস কমানোর সাহায্য করে
ত্বক সৌন্দর্যঃ তুলসী পাতা রস করে খাবার ফলে শরীরের নানান রথে মুক্তি পাওয়া যায় তেমনি তুলসী পাতা পেস্ট ত্বকে লাগিয়ে রাখলে ত্বকের বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এবং ত্বকের রক্ত পরিশুদ্ধ হয়ে যায়। এতে করে ত্বকের ইনফেকশন হওয়ার হাত থেকে সহায়তা করে।
ক্যান্সারঃ তুলসী পাতাতে রয়েছে অনেক পরিমানে আন্টি- কার্সেনোজেনিক প্রপাটিজ এর সাথে অ্যান্টি অ্যাক্সিডেন্ট যার ফলে যার হওয়ার রোগ থেকে সাহায্য করে।
মুখে দুর্গন্ধঃ প্রতিদিন সকালে নিয়মিত করে তুলসী পাতা চিবিয়ে খাবা তুলসী পাতার রস খাবার ফলে বুকের ভিতরে যাবতীয় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। এবং এছাড়াও দাঁতকে মজবুত রাখার সাহায্য করে। মুখে দুর্গন্ধ এবং দাঁতের দুটোই কাছে দেয়।
কিডনি স্টোন রাখেঃ তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে কিডনি সুস্থ রাখার সাহায্য করে থাকে। তুলসী পাতাতে রয়েছে অ্যান্টি অ্যাক্সিডেন্ট এজন্য নিয়মিত তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলে কিডনির নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য তুলসী পাতার রস খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। শুধু গ্যাস্ট্রিকের নয় পেটের ভিতর যাবতীয় রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
হার্টের কর্ম ক্ষমতা বাড়াতেঃ হার্ট সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত প্রতিদিন সকালে তুলসী পাতা চিবিয়ে খাবেন অথবা রস করে খাবেন। এতে করে আপনার হার্টের কর্ম ক্ষমতা বাড়ানোর সহায়তা করবে।
ডায়াবেটিকসঃ কম বেশি অধিকাংশ মানুষের ডায়াবেটিস রয়েছে। আরে ডায়াবেটিসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিয়মিত তুলসী পাতা সেবন করুন। তাহলে দেখবেন আপনার ডায়াবেটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জ্বর বা ঠান্ডাঃ আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসতেছি যে জ্বর কিংবা ঠান্ডা লাগলে তুলসী পাতার রস করে খাওয়াই। আসলে তুলসী পাতার রস জ্বর বা ঠান্ডা লাগার ক্ষেত্রে সেবন করলে খুবই উপকারী। এজন্যই ঝড় আবার ঠান্ডা লাগলে তুলসী পাতার রস করে সেবন করুন।
ফুসফুস সুস্থ রাখেঃ গবেষণা করে দেখা গেছে যে ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য তুলসী পাতার রস খাওয়ার বেশ উপকারী রয়েছে। তাই ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত তুলসী পাতা রস সেবন করবেন।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়ঃ অধিকাংশ মানুষের দৃষ্টিশক্তিতে ভুগছে। সেসব মানুষের ভোগান্তি দূর করার জন্য নিয়মিত তুলসী পাতার রস সেবন করবেন। তাহলে আস্তে আস্তে দেখবেন আপনার দৃষ্টিশক্তি উন্নতি হচ্ছে।
ম্যাথা ব্যাথাঃ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অধিকাংশ মানুষের মাথা যন্ত্রণা বেড়ে যায়। তাই আশেপাশে তুলছি গাছ থাকলে সেখান থেকে পাতা নিয়ে রস করে খাওয়ার মাধ্যমে মাথা যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এজন্যই যখনই মাথা যন্ত্রণা শুরু হবে তখনই তুলসী পাতার রস করে খাবেন। দেখবেন ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে আপনার মাথা যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
স্ট্রেস কমাতেঃ শরীরের হরমোন নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য তুলসী পাতা রস করে সেবন করবেন। তুলসী পাতা সেবনের ফলে শরীরের নানাবিধের অক্ষমতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এজন্যই নিয়মিত তুলসী পাতা রস করেছে ফোন করতে পারেন।
সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। উপরোক্ত কারণগুলোর জন্য তুলসী পাতার রস খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন। অন্যথায় সঠিক নিয়মে সেবন না করার ফলে শরীরের স্বাস্থ্য রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এতে করে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করবেন তুলসীর পাতা দেখবেন শরীরের নানান রক দূর হয়ে গিয়েছে।
তুলসী পাতা খাওয়ার অপকারীতা
সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।তুলসী পাতার রস খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এতে করে শরীরের নানান রোগ আজ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তেমনি তুলসী পাতা শরীরের জন্য অপকারীও রয়েছে। অতিরিক্ত মাত্রায় তুলসী পাতা সেবন করার ফলে শরীরের ক্ষতিকারক দিকগুলো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেননা কোন কিছুই অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করা উচিত নয়।
তুলসী পাতা অতিরিক্ত মাত্রায় করার ফলে শরীরের উচ্চ রক্তচাপ কমে যেতে পারে। বেশি পাতা তে রয়েছে পটাশিয়াম যা অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করলে শরীরের স্বাস্থ্য ঝুকে বেড়ে যায়। উপরোক্ত তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারী দিকগুলো বর্ণনা করেছি। যদি অতিরিক্ত মাত্রায় তুলসী পাতা সেবন করলে উপকার হওয়ার থেকে ক্ষতির দিকে সম্ভাবনা বেশি থাকবে। অতএব তুলসী পাতা সেবন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করাই উচিত।
সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। আমরা জানি তুলসী পাতায় বেশি উপকারী রয়েছে। কিন্তু অনিয়মভাবে তুলসী পাতা সেবন করবেন না। তাহলে শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রবাহ বেড়ে যাবে। তাই যদি কোন রোগ নিরাময় করার জন্য তুলসির পাতা অপরিসীম গুরুত্ব রাখে। তাই যে কোন জিনিস খাওয়ার আগে ভালোভাবে যাচাই করে নেবেন।
তুলসি পাতা খাওয়ার নিয়ম
সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। তুলসির পাতা আমরা অনেকেই বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য খেয়ে থাকে। কিন্তু আমরা তুলসী পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে তেমন কিছু জানিনা। যে কোন জিনিস খাওয়ার আগে তার নিয়মাবলী সম্পর্কে জানতে হবে এবং তারপর সেই জিনিসটা খেতে হবে। নয়তো শরীরের জন্য ক্ষতিকারক দিক হয়ে উঠবে। তাহলে চলুন তুলসী পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিই।
তুলসী পাতার রস করে খাওয়ার জন্য কয়েকটি পাতা নিবেন। এবং তার সাথে দু টেবিল চামচ মধু নিবেন। এবং তার সাথে আধা চিমটি হলুদের গোড়া নিবেন, আধা চিমটি লং নিবেন, এবং তার সাথে মরিচ নিবেন সেটা হতে পারে গোলমরিচ কিংবা কাঁচামরি। এসব সবকিছুই একত্রে করে ভালোভাবে মিশিয়ে নিবেন। নয়তো ব্যালেন্ডার এ দিয়ে মিক্সট করে রস করে নিবেন। রস করে নেওয়ার পরে দিনে ৫ মিলি করে।
সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। প্রতিদিন দু থেকে তিনবার সেবন করা উচিত। কেননা প্রতিটি উপাদানই খুবই গরম প্রাকৃতিক হয়ে থাকে। এজন্যই নিয়ম করে প্রতিদিন সেবন করবেন। এইভাবে ১০ থেকে ১৫ দিন সেবন করবেন। দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার রোগটি নিরাময় হয়ে যাচ্ছে। এভাবে আপনি তুলসী পাতার রস করে নিয়াম করে খেতে পারবেন। তবে পরিবেশে একটা কথাই বলতে চাই যে তুলসী পাতা রস করে খাওয়ার আগে অন্তত একটিবার চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
শিশুদেরকে তুলসী পাতা খাওয়ানোর নিয়ম
সকালে খালি পেটে তুলসি পাতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। শিশুদেরকে তুলসী পাতা খাওয়ানোর জন্য অবশ্যই নিয়মাবলী অনুযায়ী খাওয়ানো উচিত। শিশুদের সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, জ্বর, ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগের জন্য শিশুদেরকে তুলসী পাতা খাওয়ায় থাকে। তবে তার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষেরই জানে না। তাহলে চলুন নিজেদেরকে তুলসী পাতা খাওয়ানোর সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।
শিশুদেরকে তুলসী পাতা খাওয়ানোর জন্য নিম্নে কয়েকটি নিয়ম সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো। যথা;
শিশুদেরকে তুলসী পাতা খাওয়ানোর জন্য তুলসী পাতার সাথে এক টুকরো আদা শিলপাটাই বা ব্লেন্ডারে ভালোভাবে মিক্সটস করে রস করে নিতে হবে। ভালোভাবে মিক্সটস করে নেওয়ার পরে দিনে দুবার করে খাওয়ানো উচিত।
রসকৃত তুলছে পাতার সাথে মধু নিয়ে খাওয়াতে পারেন। কেননা তুলসী পাতা অনেক তিতা যা ছোট বাচ্চারা খেতে চাই না। ছোট বাচ্চারা যেন খেতে পারে সেই পরিমাণে মধু নিয়ে তুলসী পাতা একত্র করে খাওয়াবেন।
একটি পাত্রে পানি গরম করে তাতে তুলসী পাতা দিয়ে এবং তার সাথে আদা কুচি কুচি করে দিয়ে ও তার সাথে দারুচিনির গুড়া দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নেবেন। মিশে নেয়ার পরে পানিটি আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
তুলসী পাতার রস করে এবং তার সাথে গুর বা চিনি একত্রিত করে ভালোভাবে মিশিয়ে আপনার ছোট্ট শিশুকে খাওয়াতে পারেন। গুর বা চিনি একত্রে মিশিয়ে খাওয়ালে সেটি বাচ্চারা অনায়াসে খেতে পারবেন। কেননা শুধু তুলসী পাতা অনেক তিতা। তাই এই পদ্ধতি অবলম্বন করে খাওয়াতে পারেন।
আমরা ছোটকাল থেকেই শুনে আসছি যে শিশুদের জ্বর সর্দি কিংবা ঠান্ডা জনিত রোগের কারণে তুলসী পাতার রস করে খাওয়ায়। তাই তুলসী পাতা রস করে খাওয়ানোর মাধ্যমে শরীরের বেশ উপকারী রয়েছে। কিন্তু পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাই যে তুলসী পাতার রস করে খাওয়ানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসঙ্গের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
শেষ কথাঃ তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
তুলসী পাতা একটা আয়ুর্বেদিক ওষুধ। যা সেবনের ফলে শরীরের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের হাত থেকে রক্ষা করে। তুলসী পাতাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। তুলসী পাতার গুনাগুন বলে শেষ করার মতো না। আজকে আপনাদের সাথে তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এবং তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম ও শিশুদেরকে খাওয়ানোর নিয়ম সম্পর্কে বর্ণনা করেছি।
তুলসী পাতা খাবার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। এবং আরো নিত্য নতুন আর্টিকেল লেখার উৎসাহিত করবেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ .......!!!
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url