তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারীতা সম্পর্কে বিস্তারিত এই আর্টিকেল জুড়ে থাকছে। কেননা তোকমা খাওয়ার জন্য শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে নিরাময় পাওয়া যায়। সেজন্যই তোকমা খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। এবং তোকমা শরবত তৈরি করার মাধ্যমেও খাওয়া যায়। এতে করে শরীরের
ক্লান্তি ভাব দূর করার জন্য ব্যাপক হারে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও রূপচর্চা করার জন্য তোকমা গুঁড়ো ব্যবহার করা যায়। তাহলে দেরি না করে চলুন তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিব।
পেইজ সূচিপত্রঃ তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- তোকমার পুষ্টি উপাদান
- তোকমা দানা খাওয়ার নিয়ম
- তোকমা দানা খাওয়ার উপকারিতা
- তোকমা খাওয়ার অপকারিতা
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তোকমা খেলে কি হয়
- তোকমা দানা কখন খাওয়া উচিত
- তোকমা দানা নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- শেষ কথাঃ তোকমা দানা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
তোকমার পুষ্টি উপাদান
তোকমা দানার পুষ্টি উৎপাদন সমূহ সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা তোকমা খাওয়ার ব্যাপক উপকারিতা রয়েছে এজন্যই তোকমা দানার মধ্য কি কি উপাদান গুলো রয়েছে সেগুলো জানতে হবে। তোকমা দানা ছোট ছোট কালো রঙ্গের বীজ যা মূলত শরবত বা মিষ্টি পানীয় সাথে মিশ্রিত করে খাওয়া যেতে পারে। এবং তোকমা দানা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার জন্য অন্যতম বীজ হলো তোকমা দানা।
তোকমা দানাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, আয়রন এবং আঁশ। তোকমা দানা আমাদের দেশে খুবই পরিচিত একটি বীজ। তোকমা দানা এটি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে সুপরিচিত। যেমন মিষ্টি বেসিল, সবজা বীজ, ফালুদা বীজ, এবং তুর্কমারিয়া বীজ নামে পরিচিত। এই ছোট ছোট তোকমা বীজে প্রচুর পরিমাণে গুণাবলীতে রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
এজন্যই তোকমা বীজ খাওয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারিতা বয়ে আনে। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে প্রতি ১০০ গ্রাম তোকমাতে রয়েছে ২৩৩ কিলো ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন রয়েছে ২৩ গ্রাম এছাড়াও কার্বোহাইড্রেট ৪৮ গ্রাম রয়েছে এই ছোট ছোট তোকমা বীজে। এজন্যই তোকমা বীজ সেবন করে শরীরের বিভিন্ন রকমের উপকার করার জন্য ভূমিকা রাখে।
তোকমা দানা খাওয়ার নিয়ম
তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এসব জানার আগে তোকমা দানা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা কোন কিছু খাওয়ার আগে তা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। তোকমা বীজ খাওয়ার শরীলের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি দানবীজ। তবে নিয়ম অনুযায়ী না খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে চলুন তোকমা দানা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই।
তোকমা দানা সাধারণত ছোট ছোট দানা জাতীয় বীজ। এই ছোট ছোট দানা জাতীয় বীজকে এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেটি ৩০ মিনিট পর খেতে পারেন। এছাড়াও আপনি যদি তোকমা এবং বাদাম একসাথে ব্লেন্ডারে মিশ্রিত করে খাবেন তাহলে এটিও একটি সহজ মাধ্যম। তাছাড়াও তোকমা বীজ ভালোভাবে ব্লেডার মিশ্রিত করে দুধ ও মধুর সঙ্গে সেবন করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ প্রতিদিন ২ কোয়া রসুন খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন
এছাড়াও তোকমা বীজ এবং চিয়া সিড একত্র করে পানিতে ভিজিয়ে রেখে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর খেতে পারেন। এবং ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা একত্র করে পানিতে ভিজিয়ে রেখে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন উপায়ে তোকমা দানা খাওয়া যেতে পারে। আপনি চাইলে উপরোক্ত পদ্ধতিতে তোকমা খেতে পারেন। তোকমা খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন রোগ হতে নিরাময় পাওয়া যায়।
তোকমা দানা খাওয়ার উপকারিতা
ইতিমধ্য আমরা জেনে এসেছি তোকমা দানার পুষ্টিগুণ এবং খাবার নিয়ম সম্পর্কে। এখন আমাদের জানতে হবে তোকমা বীজ খাওয়ার ফলে শরীরের কি কি উপকারিতা হয় তা সম্পর্কে। ছোট ছোট তোকমা বীজে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উৎপাদন রয়েছে। যার কারণে শরীরের জন্য তোকমা খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। তাহলে চলুন তোকমা দানা খাওয়ার ফলে শরীরের কি কি উপকার হয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেব।
তোকমা দানা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ
- ওজন কমানো।
- হজম শক্তি দূর করানো।
- রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করানো।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করানো।
- সুস্থ ত্বক রাখার সাহায্য।
- ঠান্ডা নিরাময়ের সহায়তা।
- পুষ্টির জন্য ভালো।
- হৃদপিন্ডেকে সুস্থ রাখে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
- কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধান।
- যৌন শক্তি বৃদ্ধি।
- চাপমুক্তি ইত্যাদি।
পুষ্টিকরঃ শরীরে পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধি করার জন্য তোকমা খাওয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারী। কারণ তোকমা দানাতে রয়েছে ভিটামিন কে যা আমাদের বাড়তি পুষ্টি উপাদান করতে সাহায্য করে। এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এছাড়াও এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
হজমি শক্তিঃ তোকমা খাওয়ার ফলে হজমি শক্তি বাড়ানোর সাহায্য করে থাকে। তোকমা দানা পানিতে ভিজিয়ে রাখার ফলে এক ধরনের তেল জাতীয় পদার্থ থাকে যা আমাদের হজমি শক্তি করানোর জন্য সাহায্য করে থাকে।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃ ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তোকমা দানার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। কারণ তোকমা বীজে থাকা ফাইবার যা আমাদের অতিরিক্ত খাবার চাহিদা কমানোর জন্য সহায়তা করে থাকি। এজন্যই আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গুলো নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তোকমা দানার গুরুত্ব অপরিসীম। তোকমা বীজ নিয়মিত সেবনের ফলে শরীরের রক্ত প্রবাহ শর্করা গতি কমিয়ে দিয়ে থাকে এবং রক্তে যে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সহযোগিতা করে থাকে।
হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যঃ হৃদয়ে রোগের মতো মারাত্মক রোগ হতে নিরাময় করার জন্য তোকমা বীজ গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ তোকমা ভিজে থাকা অ্যান্টি এক্সিডেন্ট যা হৃদয় রোগে ঝুঁকি কমানোর জন্য সহায়তা করে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ সমস্যা দেখা দিলে এই তোকমা বীজ খাবার ফলে তার থেকে পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে থাকে। এবং এই তোকমা দানাতে থাকা আন্টি অ্যাক্সিডেন্ট শরীরের বিভিন্ন রোগ নিরাময় করার জন্য সাহায্য করে থাকে।
ত্বক সুস্থ রাখেঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য তোকমা বীজ খাওয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারী একটি উপাদান। তোকমা দানা তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক সুরক্ষা করার জন্য বেশ ভূমিকা পালন করে থাকে।
মানুষিক টেনশনঃ তোকমা দানা পানিতে ভিজে রেখে খাওয়ার ফলে শরীরের শীতল প্রবাহ বয়ে আনে যার কারণে মানসিক টেনশন হতে নিরাময় করার জন্য ব্যাপক হারে সাহায্য করে থাকে। এজন্যই মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিয়মিত তোকমা দানা সেবন করুন।
ঠান্ডার সমস্যাঃ তোকমা দানা ঠান্ডা প্রতিরোধ একটি উপাদান যা মানব দেহের ঠান্ডার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ করার জন্য গুরুত্ব অপরিসীম। যদি কাশি এবং সর্দি জাতীয় সমস্যা থেকে থাকে তাহলে তোকমা দানা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেবন করুন।
যৌন ক্ষমতাঃ তোকমা দানা খাওয়ার ফলে শরীরের যৌন শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য ব্যাপক সাহায্য করে। কারণ তোকমা দানাতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যার কারণে যৌন ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য ভূমিকা রাখে।
মুখের সমস্যা দূর করেঃ তোকমা দানা খাবার ফলে আপনার মুখের ভিতরে যেকোনো সমস্যা হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে। যেমন মনে করুন আপনার মুখের ভিতরে আলসার বা ইনফেকশন এসব বিভিন্ন সমস্যা হতে নিরাময় করা অবদান রাখে।
আরও পড়ুনঃ প্রতিদিন সকালে কিসমিস ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করানোঃ আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন নিয়মিত করে তোকমা দানা ভিজিয়ে অথবা শরবত করার মাধ্যমে খেতে পারেন। তাহলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা হতে সমাধান পাবেন।
তোকমা খাওয়ার অপকারিতা
উপরোক্ত বর্ণিত থেকে আমরা জেনে আসলাম তোকমা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। এখন আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরি তোকমা খাওয়ার ফলে শরীরের জন্য কি কি অপকারিতা হতে পারে তা সম্পর্কে। কেননা অতিরিক্ত পরিমাণে তোকমা বীজ সেবনের ফলে উপকার চেয়ে অপকারিতায় হতে পারে। যার কারণে তোকমা দানা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। আসুন তোকমা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
তোকমা দানা খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের অপকারিতা হতে পারে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- এলার্জির সমস্যা
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।
- গর্ভবতী মায়েদের সমস্যা।
এলার্জির সমস্যাঃ আপনার যদি এলার্জি জাতীয় সমস্যা থাকে তাহলে আপনার জন্য তোকমা দানা খাওয়া উচিত নয়। কেননা তোকমা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের এলার্জি দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে যার কারণে আপনি তোকমা দানা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাঃ আপনার যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনি তোকমা বীজ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা তোকমা দানা খাবার ফলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বৃদ্ধি পাবে তাই তোকমা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
গর্ভবতী মায়েদের সমস্যাঃ গর্ভবতী থাকাকালীন একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য তোকমা খাওয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারী। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে তোকমা দানা খাবার ফলে গর্ভবতী মায়েদের শরীরের ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েদের তোকমা দানা খাওয়া থেকে বিরত রাখুন।
আরও পড়ুনঃ খালি পেটে কাঁচা ছোলা ও কিসমিস খাওয়ার নিয়ম
উপরোক্ত বর্ণনা অনুযায়ী আমরা জানতে পারলাম যে তোকমা খাওয়ার ফলে শরীরের কি কি অপকারিতা হতে পারে। উপরোক্ত সমস্যা যদি আপনার থেকে থাকে তাহলে তোকমা দানা খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কেননা যে উপাদান খাবার ফলে শরীরে সমস্যা দেখা দিতে পারে সেই উপাদান না খাওয়াই উত্তম। তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। এসব সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জেনে নিয়েছি। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করাই উচিত।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তোকমা খেলে কি হয়
প্রতিদিন নিয়মিত করে সকালে খালি পেটে তোকমা খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা হতে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। যার কারণে আমাদের প্রত্যেকের উচিত তোকমা খাওয়া। আমাদের অধিকাংশই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন মনে করুন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, পেট ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা, যৌনশক্তির সমস্যা, ওজন বজায় রাখা ইত্যাদি অনেক রকমের সমস্যা রয়েছে।
আপনার যদি এ সকল সমস্যা সম্মুখীন হয়ে থাকেন তাহলে আপনিও প্রতিদিন সকালে নিয়মিত করে তোকমা দানা এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন। তাহলে আপনি বিভিন্ন সমস্যা হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সাহায্য করবে। তোকমা ১/২ চা চামচ পরিমাণ এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। প্রায় ৩০ মিনিট পর সেবন করুন। তাহলে আপনার শরীরের বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগ হতে নিরাময় হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
আপনি যদি শুধু তোকমা খেতে না পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি চিনি, দুধ অথবা মধু মিশ্রিত করে সেবন করতে পারেন। আপনার বিভিন্ন সমস্যা নিরাময় করার জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে অবলম্বন করে সমস্যাগুলো দূর করতে পারবেন।
তোকমা দানা কখন খাওয়া উচিত
তোকমা দানা খাবার ক্ষেত্রে তেমন কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। আপনি চাইলে সকালে খালি পেটে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে খেতে পারেন। তোকমা দানা খাবার ফলে শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করে। এবং সারাদিনের যে পুষ্টি চাহিদা রয়েছে তা পূরণ করার সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও তোকমা খাওয়া শরীরের জন্য বেশ উপকারী একটি উপাদান।
আপনি যদি সকালে খালি পেটে তোকমা দানা পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের বিভিন্ন উপকার করার জন্য ভূমিকা রাখে। আপনি সকালে খালি পেটে তোকমা খাওয়ার ফলে সারাদিন যে পুষ্টি চাহিদা দরকার তা পূরণ করার জন্য সহায়তা করে। এছাড়া রাতে ঘুমানোর আগে তোকমা খাওয়ার ফলে সারাদিনের যে ক্লান্তি ভাব দূর করবে এবং রাতের ঘুম অনেক ভালো হবে। এবং আপনার যদি যৌন শক্তি কম হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে যৌন শক্তি বাড়ানোর জন্য সাহায্য করবে।
তোকমা দানা নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
তোকমা দানা নিয়ে আপনাদের মনে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে। তাই আপনাদের কথা বিবেক বিবেচনা করে নিম্নে কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।
প্রশ্নঃ সকালে খালি পেটে তোকমা খেলে কি হয়?
উত্তরঃ সকালে খালি পেটে তোকমা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে মুক্তি পাওয়া যায়। যেমন, গ্যাস্ট্রিক, পেট ব্যথা, ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা, ত্বক সুস্থ রাখা, চর্ম-রোগ নিরাময় করে থাকে ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ তোকমা দানা কি প্রতিদিন খাওয়া যায়?
উত্তরঃ জী হ্যাঁ,আপনি চাইলে প্রতিদিন নিয়মিত করে তোকমা দানা খেতে পারেন। তোকমা ১/২ চা চামচ এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় ডালিম খাওয়ার উপকারিতা
প্রশ্নঃ তোকমা বীজ খেলে কি মোটা হয়?
উত্তরঃ তোকমা দানা খাবার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার সাহায্য করে থাকে। এবং আপনি যদি তোকমা এবং বাদাম একসঙ্গে মিশ্রিত করে খাবার ফলে অতিরিক্ত ক্ষুধা থেকে নিয়ন্ত্রণ রাখবে।
প্রশ্নঃ তোকমা দানা খাবার ফলে কি গ্যাস কমে?
উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই, আপনার যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি নিয়মিত তোকমা দানা সেবন করুন। এতে করে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
প্রশ্নঃ তোকমা বীজ ও চিয়া সিড কী এক?
উত্তরঃ জ্বি না, তোকমা এবং চিয়া সিড দুটোই একই রকম দেখতে হলেও আলাদা আলাদা। চিয়া সিড বাদামি এবং কালচে গোলাকার ডিমের মতো হয়ে থাকে। এবং তোকমা কালো ও কিছুটা বাদামি রঙ্গে গোলাকার হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ তোকমা বীজে কত ক্যালরি থাকে?
উত্তরঃ পুষ্টিবিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে ১০০ গ্রাম তোকমা দানায় ২৩৩ কেলো ক্যালরি রয়েছে, ২৩ গ্রাম প্রোটিন, ৪৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট রয়েছে এই ছোট ছোট তোকমা দানাতে।
প্রশ্নঃ তোকমা বীজ কত টাকা কেজি?
উত্তরঃ তোকমা বীজ সাধারণত ১ কেজি ২৮০ টাকা মাত্র। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন যে বাংলাদেশের যেকোনো জিনিসের মূল্য তালিকা কম বেশি হয়ে থাকে।
শেষ কথাঃ তোকমা দানা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা। তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এতক্ষন আমরা বিস্তারিত জেনে আসলাম। তোকমা খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন রকমের উপকার পাওয়া যায় এবং অতিরিক্ত পরিমাণে তোকমা খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। তাই কোন কিছু খাওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করা উচিত নয়।
প্রিয় পাঠক, আমি আশা করছি যে আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমে আপনি তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এবং একই সাথে তোকমা দানার পুষ্টিগুণ ও তোকমা দানা খাওয়ার নিয়ম। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তোকমা দানা খাবার ফলে কি কি উপকারিতা রয়েছে। আমাদের এই আর্টিকেলটি এতক্ষণ মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ....!!!❤️
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url